হারিয়ে যাচ্ছে প্রাচীন লোকজ কাঠের তৈরি ঐতিহ্যবাহী ‘ঘাইল ছিয়া’


হারিয়ে যাচ্ছে প্রাচীন লোকজ কাঠের তৈরি ঐতিহ্যবাহী ‘ঘাইল ছিয়া’
হানিফ পারভেজ,বড়লেখা(মৌলভীবাজার)—
গ্রামীণ বাংলার এক সময়ের শত বছরের ঐতিহ্য ঘাইল-ছিয়া এখন আধুনিকতার ছোঁয়ায় হারিয়ে যেতে বসেছে।
সিলেট অঞ্চলে মসলা ও চাল কুটার কাঠে তৈরি এই বিশেষ জিনিসকে বলা হয় ঘাইল-ছিয়া। অঞ্চলভেদে এর নামের ভিন্নতা রয়েছে।
গ্রামে গ্রামে পিঠা তৈরি করতে চাউল গুঁড়ি (ভাঙানো) করার জন্য কাঠের তৈরি ঘাইল-ছিয়া নারী-পুরুষের কাছে বেশ জনপ্রিয় ছিল।কালের বিবর্তনে ঘাইল-ছিয়া এখন বিলীন হয়ে যাচ্ছে।
বাড়ির নারীরা মনের আনন্দে পিঠা খাওয়ার জন্য ঘাইলের মধ্যে চাউল রেখে দুই হাতে ছিয়া দিয়ে আঘাত করে করে চাউল গুঁড়ি করতেন।
এ কাজে কখনো কখনো দুইজন নারী দুটি ছিয়া দিয়ে তালে তালে ও গ্রামীণ লোকজ গানের সুরে সুরে চাউল কুটতেন (গুঁড়ি করতেন)।শুধু চাউলই কুটতেন না, কখনো কখনো বিশেষ প্রয়োজনে ধানও ভেঙে চাউল বের করতেনকিন্তু এ গ্রামীণ এ দৃশ্য অনেক এলাকা থেকে এখন বিলীন হয়ে গেছে।
কারও কারও কাছে ঘাইল-ছিয়া এখন শুধু স্মৃতি হয়ে রয়েছে। কোনো কোনো এলাকায় এখন আর ঘাইল ও ছিয়া খুঁজেও পাওয়া যাবে না।
আগে শীতের পিঠাপুলি তৈরির প্রধান উপকরণ চাউলের গুঁড়ি প্রস্তুতের জন্য ঘাইল ও ছিয়াই ছিল একমাত্র ভরসা।
গ্রামের নারীরা ধান ভানা থেকে শুরু করে চাউলের গুঁড়ি কুটার কাজ করতেন এ ঘাইল-ছিয়া দিয়েই।
আবার কখনো কখনো নারীরা গ্রামীণ লোকজ গানের সুরে সুরে মনের আনন্দ উল্লাসে বাড়ির উঠানে অথবা খালি জায়গায় ঘাইল-ছিয়া দিয়ে চাউলের গুঁড়ি কুটতেন, ধানও ভাঙাতেন কিন্তু কালের বিবর্তনে আজ হারিয়ে গেছে গ্রামীণবাংলার সেই চিরচেনা ঐতিহ্যবাহী কাঠের যন্ত্র ঘাইল-ছিয়া।
আপনার মতামত লিখুন