শ্রীমঙ্গল উপজেলা ও পৌর বিএনপির বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত
আজ (২০মে ২০২৫খ্রি:) শ্রীমঙ্গল পৌর মিলনায়তনে পৃথক পৃথক কক্ষে অনুষ্ঠিত হয় শ্রীমঙ্গল উপজেলা ও পৌর বিএনপির বর্ধিত সভা।
উপজেলা বিএনপির বর্ধিত সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মোঃ ফয়জুল করিম ময়ুন এবং বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা বিএনপির সদস্য সচিব মোঃ আব্দুর রহিম রিপন।
সভায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মোঃ নুরে আলম সিদ্দিকী। এতে উপস্থিত ছিলেন মোঃ তাজ উদ্দিন তাজু, আতাউর রহমান লাল হাজী, মহসিন মিয়া মধু, হাফিজুর রহমান তুহিন, মোঃ ইয়াকুব আলী, আতিকুর রহমান জরিপসহ আহ্বায়ক কমিটির সকল সদস্যবৃন্দ।
সভায় ৯টি ইউনিয়নে কর্মীসভা করার নির্দেশনা প্রদান করা হয় এবং এ সংক্রান্ত একটি ক্যালেন্ডার প্রকাশ করা হয়। সমসাময়িক ঘটনাবলী নিয়েও আলোচনা হয়, যেখানে জেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দ সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে গণতান্ত্রিক পরিবেশ বজায় রেখে ইউনিয়ন কমিটি গঠনের আহ্বান জানান।
১নং মির্জাপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা মোঃ সুফি মিয়া তার ইউনিয়নবাসীর পক্ষ থেকে সকল নেতাকর্মীদের ধন্যবাদ জানান। সভার সমাপ্তি ঘোষণা করেন আহ্বায়ক মোঃ নুরে আলম সিদ্দিকী।
অন্যদিকে, পৌর বিএনপির বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয় পৌর বিএনপির আহ্বায়ক মোঃ শামীম আহমদের সভাপতিত্বে এবং সঞ্চালনায় ছিলেন সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মোঃ মিল্লাত হোসেন মিরাশদার। সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা আহ্বায়ক মোঃ ফয়জুল করিম ময়ুন এবং বিশেষ অতিথি ছিলেন সদস্য সচিব মোঃ আব্দুর রহিম রিপন।
সভায় পৌর আহ্বায়ক কমিটির নেতৃবৃন্দ বক্তব্য প্রদান করেন এবং দ্রুত ওয়ার্ড পর্যায়ে কর্মীসভা করে কমিটি গঠনের নির্দেশনা দেন জেলা নেতৃবৃন্দ। কর্মীসভার তারিখ উল্লেখ করে একটি ক্যালেন্ডার ঘোষণা করে ধন্যবাদ জ্ঞাপনের মাধ্যমে সভার সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।
লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান: প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি
লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান বাংলাদেশের অন্যতম সুন্দর ও প্রাকৃতিকভাবে সমৃদ্ধ বনাঞ্চল। এটি মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত এবং ১৯৯৬ সালে জাতীয় উদ্যান হিসেবে ঘোষণা করা হয়। প্রায় ১,২৫০ হেক্টর জায়গাজুড়ে বিস্তৃত এই উদ্যানটি বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও জীববৈচিত্র্যের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান।
উদ্যানের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য:
লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের চারপাশে রয়েছে সবুজে ঘেরা পাহাড়ি বন। বড় বড় গাছপালা, বাঁশঝাড়, লতা-গুল্ম এবং ঝরনাধারা মিলে উদ্যানটি এক অপার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য সৃষ্টি করেছে। ঘন সবুজ বনের ভিতর দিয়ে পায়ে হাঁটার সরু রাস্তা পর্যটকদের মনোরম অভিজ্ঞতা প্রদান করে। সকালে কুয়াশার চাদরে ঢাকা এই বন মনে হয় এক স্বপ্নময় রাজ্য।
জীববৈচিত্র্য:
লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানটি বন্যপ্রাণীর জন্য বিখ্যাত। এখানে রয়েছে ২৬ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী, ২৪৬ প্রজাতির পাখি, ৬ প্রজাতির উভচর এবং ২০ প্রজাতির সরীসৃপ। উল্লুক, চশমাপরা হনুমান, মাকাক বানর, কাঠবিড়ালীসহ বিভিন্ন স্তন্যপায়ী প্রাণী দেখা যায়। এছাড়া হরিয়াল, ময়না, কাঠঠোকরা, শ্যামা, বুলবুলি সহ বিভিন্ন রকমের পাখির কাকলি বনটিকে আরও জীবন্ত করে তোলে।
পর্যটন ও ভ্রমণ:
লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান পর্যটকদের জন্য অত্যন্ত আকর্ষণীয় স্থান। এখানে ভ্রমণপিপাসুরা গাইডের সাহায্যে বনের বিভিন্ন ট্রেইল ঘুরে দেখতে পারেন। স্থানীয় আদিবাসীদের সংস্কৃতি ও জীবনধারার সাথে পরিচিত হওয়ার সুযোগও রয়েছে। ট্রেনলাইন দিয়ে ছুটে চলা ট্রেন, সবুজ বনের মধ্যে দিয়ে হাঁটা, পাখিদের গান—এসব মিলে এক রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা হয়।
সমস্যা ও চ্যালেঞ্জ:
লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের জীববৈচিত্র্য বর্তমানে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। বনের ভিতর দিয়ে ট্রেনলাইন চলে যাওয়া, পর্যটকদের অসচেতনতা, অবৈধ বন উজাড় ইত্যাদি কারণে উদ্যানের প্রাণী ও পরিবেশের উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। এসব সমস্যা মোকাবেলায় প্রশাসনের কার্যকর পদক্ষেপ এবং পর্যটকদের সচেতনতা বৃদ্ধি জরুরি।
উপসংহার:
লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান শুধুমাত্র একটি পর্যটন কেন্দ্র নয়, এটি বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং জীববৈচিত্র্যের একটি অনন্য নিদর্শন। এই উদ্যানের সুরক্ষা ও সংরক্ষণে সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন। প্রকৃতির অপার মহিমা অনুভব করতে হলে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান একবার হলেও ভ্রমণ করা উচিত।