বড়লেখায় কিন্ডারগার্টেন এসোসিয়েশনের মানববন্ধন

বড়লেখায় কিন্ডারগার্টেন এসোসিয়েশনের মানববন্ধন
হানিফ পারভেজ
বড়লেখা,মৌলভীবাজার
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য ঘোষিত ২০২৫ সালের প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় কিন্ডারগার্টেন শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণের সুযোগ না রাখায় ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন বড়লেখাসহ সারাদেশের শিক্ষক, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা। ফলে মানববন্ধন করেছেন বড়লেখার কিন্ডারগার্টেন এসোসিয়েশন এর শিক্ষকবৃন্দরা।
বুধবার (২৪ জুলাই) দুপুরে পৌরশহরের শহিদ মিনার এর সামনে ‘ বড়লেখা কিন্ডারগার্টেন এসোসিয়েশন” এর আয়োজনে এক মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এতে উপজেলার বিভিন্ন কিন্ডারগার্টেন স্কুলের শতাধিক শিক্ষকবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন।মানববন্ধন কর্মসূচীর শুরুতেই উত্তরার মাইলস্টোনে বিমান দূর্ঘটনায় নিহতদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে ও আহতদের সুস্থতা কামনায় দোয়া পরিচালনা করা হয়।
মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা হাতে ব্যানার-ফেস্টুন নিয়ে ‘শিক্ষা অধিকার নিয়ে ষড়যন্ত্র মানি না,মানবো না,বৈষম্য নয় সমতা চাই,মেধার মূল্যায়ন চাই,বৃত্তি নিয়ে বৈষম্য,আমার সোনার বাংলায় বৈষম্যের ঠাই নাই,শিশু অধিকার আইন বাস্তবায়ন চাই—এসব স্লোগান দিতে থাকেন।
কর্মসূচিতে বড়লেখা কিন্ডারগার্টেন এসোসিয়েশনের সভাপতি তপন চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও প্রচার সম্পাদক এমদাদুল করিম চৌধুরীর সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন এসোসিয়েশনে সহ সভাপতি আব্দুল হক,রুহেল আহমদ, সাধারণ সম্পাদক সামছুল ইসলাম,সহ সাধারণ সম্পাদক শাহীন আহমদ,সাংগঠনিক সম্পাদক জাহাঙ্গীর হোসেন সানেল,উপদেষ্টা সাহাব ইদ্দিন,মইনুল ইসলাম,পীনবন্ধু রুদ্র পাল,অর্থ সম্পাদক জয়নাল আবেদিন,সহ অর্থ সম্পাদক আব্দুল বাছিত,দপ্তর সম্পাদক জাকারিয়া আহমদ,সহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক লোকমান হোসেন,মহিলা বিষয়ক সম্পাদক মুক্তি রানী দাস,প্রভা চক্রবর্তী, কার্যকরী সদস্য বিপ্লব পুরকায়স্থ প্রমুখ।
এসময় বক্তারা বলেন, প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় সরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সুযোগ দিয়ে নিবন্ধনপ্রাপ্ত কিন্ডারগার্টেন শিক্ষার্থীদের বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত সরাসরি সংবিধান পরিপন্থি এবং শিক্ষাগত বৈষম্যের একটি ন্যক্কারজনক উদাহরণ।এই শিক্ষার্থীরাই এই দেশের ভবিষ্যৎ। তাদের জীবনে এই হোঁচট খাওয়ার মতো এই সিদ্ধান্তের প্রতি আমরা তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।সরকার আমাদের যেসকল শর্ত দিয়েছিলো আমরা সবগুলোই পালন করছি, তাহলে কেন আমাদের সাথে বৈষম্য করা হবে?এই বৈষম্য দূর করার জন্য আমাদের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা জীবন দিয়েছে।আমাদের শিক্ষার্থীরাই এখন বৃত্তি নামক একটি বৈষম্যের শিকার হচ্ছি।আমরা চাই অতি দ্রুত এই প্রজ্ঞাপন বাতিল করে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে অচিরেই একটি প্রজ্ঞাপন দেওয়া হবে।যেখানে আমাদের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহন করতে পারে।আমরা প্রথমে সকল কিন্ডারগার্টেন এর শিক্ষকরা অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছি।
বক্তারা আরও জানান, আমাদের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা বঞ্চিত হয়েছে বৃত্তি থেকে।আমরা সরকারের এই সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারছি না।
সরকার যদি সত্যিই বৈষম্যবিরোধী অবস্থানে থাকে, তাহলে এই সিদ্ধান্ত অবিলম্বে বাতিল করে সকল নিবন্ধিত কিন্ডারগার্টেনের শিক্ষার্থীদের পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে। অন্যথায় আমরা শিক্ষক-শিক্ষার্থী-অভিভাবক সবাইকে নিয়ে বৃহৎ আকারে সরকারের এই বৈষম্যের বিরুদ্ধে রাজপথে আরও কঠোর কর্মসূচিতে যেতে বাধ্য হবো।
উল্লেখ্য, ২০০৯ সালে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (পিইসি) পরীক্ষা চালুর মাধ্যমে বৃত্তি প্রথা বন্ধ হয়ে যায়। দীর্ঘদিন পর ২০২৫ সালে পুনরায় বৃত্তি পরীক্ষা চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়, যা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে আগামী ২১ থেকে ২৪ ডিসেম্বর। তবে এতে অংশ নিতে পারবে কেবল সরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এমন সিদ্ধান্তে দেশের কিন্ডারগার্টেন শিক্ষক-অভিভাবকদের মধ্যে ব্যাপক অসন্তোষ বিরাজ করছে।
আপনার মতামত লিখুন