সাংবাদিক নির্যাতন: কুড়িগ্রামে সাবেক জেলা প্রশাসক সুলতানা পারভীন কারাগারে

সাংবাদিক নির্যাতন: কুড়িগ্রামে সাবেক জেলা প্রশাসক সুলতানা পারভীন কারাগারে
সেপ্টেম্বর ২, ২০২৫: সাংবাদিক নির্যাতন মামলায় কুড়িগ্রামের সাবেক জেলা প্রশাসক সুলতানা পারভীন মঙ্গলবার দুপুরে জেলা দায়রা জজ আদালতে হাজিরা দিতে আসেন। এ সময় আদালত তার জামিন মঞ্জুর না করে কারাগারে পাঠায়।
মঙ্গলবার বিকেলে কুড়িগ্রাম জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোছাম্মৎ ইসমত আরা বেগম তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
১৯ এপ্রিল ২০২০: কুড়িগ্রামের সাবেক ডিসিসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা
কুড়িগ্রামের সাবেক জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোছা. সুলতানা পারভীনসহ জেলা প্রশাসনের চার কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হয়েছে। একই সঙ্গে কেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, এ জন্য ১০ দিনের মধ্যে জবাব দিতে নোটিশ দেওয়া হয়েছে।
এর আগে ১৫ ও ১৬ মার্চ ওই চার কর্মকর্তাকে কুড়িগ্রাম থেকে প্রত্যাহার করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে ন্যস্ত করা হয়। সুলতানা পারভীন ছাড়া বাকি কর্মকর্তারা হলেন কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসনের সাবেক সিনিয়র সহকারী কমিশনার (আরডিসি) নাজিম উদ্দিন, সহকারী কমিশনার রিন্টু বিকাশ চাকমা ও এস এম রাহাতুল ইসলাম।
২৭ নভেম্বর ২০২১: কুড়িগ্রামের সাবেক ডিসিকে শাস্তি থেকে অব্যাহতি
মধ্যরাতে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে সাংবাদিককে সাজা দেওয়া ও ‘নির্যাতনের’ ঘটনায় শাস্তি পাওয়া কুড়িগ্রামের তৎকালীন জেলা প্রশাসক (ডিসি) সুলতানা পারভীনকে অভিযোগের দায় থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি। এর ভিত্তিতে ২৩ নভেম্বর প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
কুড়িগ্রামে বাংলা ট্রিবিউনের জেলা প্রতিনিধি আরিফুল ইসলামকে বাড়ি থেকে ধরে এনে সাজা দেওয়ার ঘটনায় জেলা প্রশাসক (ডিসি) সুলতানা পারভীনকে দুই বছর বেতন বৃদ্ধি স্থগিত করে লঘু দণ্ডের শাস্তি দিয়েছিল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। লঘু দণ্ডের শাস্তি বাতিল করে অভিযোগের দায় থেকেও তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এ শাস্তির আদেশ দেওয়া হয়েছিল গত ১০ আগস্টে প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে। সেই প্রজ্ঞাপন বাতিল করে গত ২৩ নভেম্বর আরেকটি প্রজ্ঞাপন জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। সেই প্রজ্ঞাপনে সুলতানা পারভীনের শাস্তি বাতিলের বিষয়টি জানানো হয়েছে।
গত বছরের ১৩ মার্চ মধ্যরাতে কুড়িগ্রামের বাংলা ট্রিবিউনের জেলা প্রতিনিধি আরিফুল ইসলামকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে মাদক মামলায় সাজা দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। পরে অবশ্য জামিনে মুক্ত হন তিনি। তাঁকে নৃশংসভাবে নির্যাতন করা হয় বলে অভিযোগ করেন আরিফুল ইসলাম।
তার অভিযোগ, জেলা প্রশাসনের আরডিসি (সিনিয়র সহকারী কমিশনার) নাজিম উদ্দিন বাড়িতে ঢুকে তাকে পেটান। আর এনকাউন্টারে দেওয়ারও হুমকি দেন। জেলা প্রশাসকের অনিয়ম নিয়ে প্রতিবেদন লেখার কারণেই তার ওপর নিগ্রহ করা হয় বলে অভিযোগ করেন আরিফুল।
এ ঘটনায় দেশজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছিল। কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তখন দাবি করা হয়েছিল, ‘মাদকবিরোধী অভিযানে’ আরিফুলের কাছ থেকে আধা বোতল মদ ও ১৫০ গ্রাম গাঁজা উদ্ধার করা হয়েছে।
ঘটনার পরপরই কুড়িগ্রামের তৎকালীন জেলা প্রশাসক মোছা. সুলতানা পারভীন, রেভিনিউ ডেপুটি কালেক্টর (আরডিসি) নাজিম উদ্দিন এবং দুই সহকারী কমিশনার রিন্টু বিকাশ চাকমা ও এস এম রাহাতুল ইসলামকে প্রত্যাহার করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে ন্যস্ত করা হয়। একই সঙ্গে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলার ভিত্তিতে শাস্তি দেওয়া হয়।
আপনার মতামত লিখুন