বাহুবলে মাদ্রাসার ছাত্রকে বলাৎকারের অভিযোগ সাংবাদিক হারিছের বিরুদ্ধে
বাহুবল (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি : হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলার পুটিজুরী বাজারে মাদ্রাসার ছাত্রকে বলাৎকারের অভিযোগ উঠেছে উপজেলার যাদবপুর গ্রামের মৃত গোল মিয়ার ছেলে সাংবাদিক এফ আর হারিছের বিরুদ্ধে।
সোমবার (১৪ এপ্রিল) সন্ধ্যায় সময় উপজেলার পুটিজুরী বাজারে চক মন্ডলকাপন গ্রামের ফরিদ মিয়ার ছেলে সোহাগ (৮) বাজারে আসলে তাকে ভুলিয়ে-ভালিয়ে বাজারে সুন্দর আলী মার্কেটের ছাদের উপরে নিয়ে বলাৎকার করে এফ আর হারিছ। পরে স্থানীয়রা ওই সাংবাদিক এফ আর হারিছ কে আটক করে বাজার কমিটির কাছে সোপর্দ করে।
স্থানীয়রা জানায়, সোমবার সন্ধ্যায় উপজেলার পুটিজুরী বাজারে মাদ্রাসার ছাত্র বাজারে আসলে সাংবাদিক হারিছ তার সাথে বলাৎকারের ঘটনা ঘটায়। এর আগেও কয়েকবার সাংবাদিক এফ আর হারিছ বলাৎকার করতে গিয়ে ধরা খেয়েছেন। পরবর্তীতে বিচারের মাধ্যমে ক্ষমা চেয়ে পার পেয়েছেন।
এ ঘটনায় ওই ছাত্রের বাবা ফরিদ মিয়া বলেন, আমি থানায় মামলা দায়ের করতে যাই। তখন পুটিজুরী বাজার কমিটি সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক স্হানীয়ভাবে মীমাংসা করে দিবেন বলে আমাকে আশ্বস্ত করে থানা থেকে নিয়ে আসেন।
পুটিজুরী বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক আমরু মিয়া বলেন, আমরা ঘটনার সত্যতা পেয়েছি যেহেতু বাজারে ঘটনা তাই আমরা বাজারে বসে শেষ করার জন্য আগামী বৃহস্পতিবার বাদ এশা তারিখ করেছি।
বাহুবল মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম বলেন, ছেলের বাবা থানায় এসেছিলেন অভিযোগ দেওয়ার জন্য পরবর্তীতে আর অভিযোগ নিয়ে আসেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত-পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান: প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি
লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান বাংলাদেশের অন্যতম সুন্দর ও প্রাকৃতিকভাবে সমৃদ্ধ বনাঞ্চল। এটি মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত এবং ১৯৯৬ সালে জাতীয় উদ্যান হিসেবে ঘোষণা করা হয়। প্রায় ১,২৫০ হেক্টর জায়গাজুড়ে বিস্তৃত এই উদ্যানটি বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও জীববৈচিত্র্যের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান।
উদ্যানের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য:
লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের চারপাশে রয়েছে সবুজে ঘেরা পাহাড়ি বন। বড় বড় গাছপালা, বাঁশঝাড়, লতা-গুল্ম এবং ঝরনাধারা মিলে উদ্যানটি এক অপার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য সৃষ্টি করেছে। ঘন সবুজ বনের ভিতর দিয়ে পায়ে হাঁটার সরু রাস্তা পর্যটকদের মনোরম অভিজ্ঞতা প্রদান করে। সকালে কুয়াশার চাদরে ঢাকা এই বন মনে হয় এক স্বপ্নময় রাজ্য।
জীববৈচিত্র্য:
লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানটি বন্যপ্রাণীর জন্য বিখ্যাত। এখানে রয়েছে ২৬ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী, ২৪৬ প্রজাতির পাখি, ৬ প্রজাতির উভচর এবং ২০ প্রজাতির সরীসৃপ। উল্লুক, চশমাপরা হনুমান, মাকাক বানর, কাঠবিড়ালীসহ বিভিন্ন স্তন্যপায়ী প্রাণী দেখা যায়। এছাড়া হরিয়াল, ময়না, কাঠঠোকরা, শ্যামা, বুলবুলি সহ বিভিন্ন রকমের পাখির কাকলি বনটিকে আরও জীবন্ত করে তোলে।
পর্যটন ও ভ্রমণ:
লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান পর্যটকদের জন্য অত্যন্ত আকর্ষণীয় স্থান। এখানে ভ্রমণপিপাসুরা গাইডের সাহায্যে বনের বিভিন্ন ট্রেইল ঘুরে দেখতে পারেন। স্থানীয় আদিবাসীদের সংস্কৃতি ও জীবনধারার সাথে পরিচিত হওয়ার সুযোগও রয়েছে। ট্রেনলাইন দিয়ে ছুটে চলা ট্রেন, সবুজ বনের মধ্যে দিয়ে হাঁটা, পাখিদের গান—এসব মিলে এক রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা হয়।
সমস্যা ও চ্যালেঞ্জ:
লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের জীববৈচিত্র্য বর্তমানে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। বনের ভিতর দিয়ে ট্রেনলাইন চলে যাওয়া, পর্যটকদের অসচেতনতা, অবৈধ বন উজাড় ইত্যাদি কারণে উদ্যানের প্রাণী ও পরিবেশের উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। এসব সমস্যা মোকাবেলায় প্রশাসনের কার্যকর পদক্ষেপ এবং পর্যটকদের সচেতনতা বৃদ্ধি জরুরি।
উপসংহার:
লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান শুধুমাত্র একটি পর্যটন কেন্দ্র নয়, এটি বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং জীববৈচিত্র্যের একটি অনন্য নিদর্শন। এই উদ্যানের সুরক্ষা ও সংরক্ষণে সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন। প্রকৃতির অপার মহিমা অনুভব করতে হলে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান একবার হলেও ভ্রমণ করা উচিত।