শ্রীমঙ্গলে বিএনপির ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত
মো. শহিদ মিয়া, শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধি
শ্রীমঙ্গল উপজেলা বিএনপি, পৌর বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও অঙ্গ সংগঠনের উদ্যোগে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনায় ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আলহাজ্ব মুজিবুর রহমান চৌধুরী হাজী মুজিব। তিনি তাঁর বক্তব্যে শ্রীমঙ্গলে সাধারণ মানুষের মাঝে বিএনপির অবস্থানকে বাধাগ্রস্ত করার অভিযোগে আওয়ামী লীগ ও তাদের সহযোগীদের সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, "দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগ ও তাদের দোসররা আমাদের সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছতে বাধা দিয়েছে। কিন্তু আল্লাহর রহমতে স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগের পতন ঘটেছে। তবে, শ্রীমঙ্গলে কিছু বিএনপি নামধারী দালাল রয়েছে যারা ত্যাগী নেতাদের রাজনীতি কখনোই পছন্দ করে না। তাদের মূল উদ্দেশ্য নিজেদের অপরাধ ও দালালিকে আড়াল করা।"
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি শ্রীমঙ্গলের সাধারণ জনগণ এবং বিএনপির নেতাকর্মীদের ধন্যবাদ জানান এবং তাদের ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপি, উপজেলা বিএনপি এবং অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
ইফতার পূর্বে দেশের শান্তি, সমৃদ্ধি এবং দলের ঐক্য কামনায় বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।
লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান: প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি
লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান বাংলাদেশের অন্যতম সুন্দর ও প্রাকৃতিকভাবে সমৃদ্ধ বনাঞ্চল। এটি মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত এবং ১৯৯৬ সালে জাতীয় উদ্যান হিসেবে ঘোষণা করা হয়। প্রায় ১,২৫০ হেক্টর জায়গাজুড়ে বিস্তৃত এই উদ্যানটি বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও জীববৈচিত্র্যের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান।
উদ্যানের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য:
লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের চারপাশে রয়েছে সবুজে ঘেরা পাহাড়ি বন। বড় বড় গাছপালা, বাঁশঝাড়, লতা-গুল্ম এবং ঝরনাধারা মিলে উদ্যানটি এক অপার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য সৃষ্টি করেছে। ঘন সবুজ বনের ভিতর দিয়ে পায়ে হাঁটার সরু রাস্তা পর্যটকদের মনোরম অভিজ্ঞতা প্রদান করে। সকালে কুয়াশার চাদরে ঢাকা এই বন মনে হয় এক স্বপ্নময় রাজ্য।
জীববৈচিত্র্য:
লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানটি বন্যপ্রাণীর জন্য বিখ্যাত। এখানে রয়েছে ২৬ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী, ২৪৬ প্রজাতির পাখি, ৬ প্রজাতির উভচর এবং ২০ প্রজাতির সরীসৃপ। উল্লুক, চশমাপরা হনুমান, মাকাক বানর, কাঠবিড়ালীসহ বিভিন্ন স্তন্যপায়ী প্রাণী দেখা যায়। এছাড়া হরিয়াল, ময়না, কাঠঠোকরা, শ্যামা, বুলবুলি সহ বিভিন্ন রকমের পাখির কাকলি বনটিকে আরও জীবন্ত করে তোলে।
পর্যটন ও ভ্রমণ:
লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান পর্যটকদের জন্য অত্যন্ত আকর্ষণীয় স্থান। এখানে ভ্রমণপিপাসুরা গাইডের সাহায্যে বনের বিভিন্ন ট্রেইল ঘুরে দেখতে পারেন। স্থানীয় আদিবাসীদের সংস্কৃতি ও জীবনধারার সাথে পরিচিত হওয়ার সুযোগও রয়েছে। ট্রেনলাইন দিয়ে ছুটে চলা ট্রেন, সবুজ বনের মধ্যে দিয়ে হাঁটা, পাখিদের গান—এসব মিলে এক রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা হয়।
সমস্যা ও চ্যালেঞ্জ:
লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের জীববৈচিত্র্য বর্তমানে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। বনের ভিতর দিয়ে ট্রেনলাইন চলে যাওয়া, পর্যটকদের অসচেতনতা, অবৈধ বন উজাড় ইত্যাদি কারণে উদ্যানের প্রাণী ও পরিবেশের উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। এসব সমস্যা মোকাবেলায় প্রশাসনের কার্যকর পদক্ষেপ এবং পর্যটকদের সচেতনতা বৃদ্ধি জরুরি।
উপসংহার:
লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান শুধুমাত্র একটি পর্যটন কেন্দ্র নয়, এটি বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং জীববৈচিত্র্যের একটি অনন্য নিদর্শন। এই উদ্যানের সুরক্ষা ও সংরক্ষণে সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন। প্রকৃতির অপার মহিমা অনুভব করতে হলে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান একবার হলেও ভ্রমণ করা উচিত।