বড়লেখায় ফিলিস্তিনে ইসরাইলী গণহত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল
হানিফ পারভেজ.বড়লেখা (মৌলভীবাজার)---
ফিলিস্তিনের অসহায় নারী শিশু পুরুষ আবাল বৃদ্ধ বনিতা নির্বিশেষে মুসলমানদের উপর বর্বর ইসরাইলী গণহত্যার প্রতিবাদে ক্ষোভ চরমভাবে বিরাজমান।
মুসলমানদের প্রথম কিবলা বায়তুল মুক্বাদ্দাসকে টার্গেট করে ইহুদী নাসারা ফিলিস্তিনের নিরীহ মানুষের উপর সন্ত্রাসী হামলা করে আসছে।
শুক্রবার (২১ মার্চ) বাদ জুমা মৌলভীবাজারের বড়লেখার বিভিন্ন মসজিদ থেকে সর্বস্তরের তৌহিদীর ব্যানারে বিশাল বিক্ষোভ মিছিল পৌর শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে দক্ষিণ বাজারে এক সমাবেশে মিলিত হয়।
বড়লেখা মোহাম্মদিয়া ফাজিল মাদ্রাসার শিক্ষক মাওলানা কাজী এনামুল হকের সভাপতিত্বে ও তরুণ সমাজ সেবক ফয়সল আলম স্বপনের পরিচালনায় বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান এমদাদুল ইসলাম,সাংবাদিক এম. এম আতিকুর রহমান, প্রিন্সিপাল মাওলানা জিয়াউল হক, প্রভাষক তারেক আহমদ, তরুণ সমাজ সেবক মোহাম্মদ খায়রুল ইসলাম, মাওলানা আবুল হাসান হাদী, খতিব মাওলানা আব্দুল্লাহ আলী, যুবনেতা হাফিজ সফিক আহমদ প্রমুখ।
বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা অবিলম্বে মুসলিম নিধন বন্ধে জাতিসংঘ সহ বিশ্বনেতাদের যথাযথ ভুমিকা পালনের দাবী জানান। সেই সাথে ইসরাইলী পন্য বয়কট করে বিশ্ববাসীকে জুলুম নির্যাতন নিপিড়নের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান।
লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান: প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি
লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান বাংলাদেশের অন্যতম সুন্দর ও প্রাকৃতিকভাবে সমৃদ্ধ বনাঞ্চল। এটি মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত এবং ১৯৯৬ সালে জাতীয় উদ্যান হিসেবে ঘোষণা করা হয়। প্রায় ১,২৫০ হেক্টর জায়গাজুড়ে বিস্তৃত এই উদ্যানটি বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও জীববৈচিত্র্যের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান।
উদ্যানের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য:
লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের চারপাশে রয়েছে সবুজে ঘেরা পাহাড়ি বন। বড় বড় গাছপালা, বাঁশঝাড়, লতা-গুল্ম এবং ঝরনাধারা মিলে উদ্যানটি এক অপার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য সৃষ্টি করেছে। ঘন সবুজ বনের ভিতর দিয়ে পায়ে হাঁটার সরু রাস্তা পর্যটকদের মনোরম অভিজ্ঞতা প্রদান করে। সকালে কুয়াশার চাদরে ঢাকা এই বন মনে হয় এক স্বপ্নময় রাজ্য।
জীববৈচিত্র্য:
লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানটি বন্যপ্রাণীর জন্য বিখ্যাত। এখানে রয়েছে ২৬ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী, ২৪৬ প্রজাতির পাখি, ৬ প্রজাতির উভচর এবং ২০ প্রজাতির সরীসৃপ। উল্লুক, চশমাপরা হনুমান, মাকাক বানর, কাঠবিড়ালীসহ বিভিন্ন স্তন্যপায়ী প্রাণী দেখা যায়। এছাড়া হরিয়াল, ময়না, কাঠঠোকরা, শ্যামা, বুলবুলি সহ বিভিন্ন রকমের পাখির কাকলি বনটিকে আরও জীবন্ত করে তোলে।
পর্যটন ও ভ্রমণ:
লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান পর্যটকদের জন্য অত্যন্ত আকর্ষণীয় স্থান। এখানে ভ্রমণপিপাসুরা গাইডের সাহায্যে বনের বিভিন্ন ট্রেইল ঘুরে দেখতে পারেন। স্থানীয় আদিবাসীদের সংস্কৃতি ও জীবনধারার সাথে পরিচিত হওয়ার সুযোগও রয়েছে। ট্রেনলাইন দিয়ে ছুটে চলা ট্রেন, সবুজ বনের মধ্যে দিয়ে হাঁটা, পাখিদের গান—এসব মিলে এক রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা হয়।
সমস্যা ও চ্যালেঞ্জ:
লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের জীববৈচিত্র্য বর্তমানে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। বনের ভিতর দিয়ে ট্রেনলাইন চলে যাওয়া, পর্যটকদের অসচেতনতা, অবৈধ বন উজাড় ইত্যাদি কারণে উদ্যানের প্রাণী ও পরিবেশের উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। এসব সমস্যা মোকাবেলায় প্রশাসনের কার্যকর পদক্ষেপ এবং পর্যটকদের সচেতনতা বৃদ্ধি জরুরি।
উপসংহার:
লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান শুধুমাত্র একটি পর্যটন কেন্দ্র নয়, এটি বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং জীববৈচিত্র্যের একটি অনন্য নিদর্শন। এই উদ্যানের সুরক্ষা ও সংরক্ষণে সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন। প্রকৃতির অপার মহিমা অনুভব করতে হলে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান একবার হলেও ভ্রমণ করা উচিত।