গাজায় ইসরায়েলের গণহত্যার প্রতিবাদে শ্রীমঙ্গলে সর্বদলীয় ইসলামী ছাত্র ঐক্য পরিষদের বিক্ষোভ মিছিল
শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধি:
গাজায় ইসরায়েলের সাম্প্রতিক গণহত্যা এবং মুসলিমদের ওপর আক্রমণের প্রতিবাদে শ্রীমঙ্গলে সর্বদলীয় ইসলামী ছাত্র ঐক্য পরিষদের উদ্যোগে একটি বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
গত ২১ মার্চ, শুক্রবার জুমার নামাজের পর শ্রীমঙ্গল চৌমুহনী এলাকায় এ বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। মিছিলে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রী, সাধারণ মানুষ এবং ইসলামী নেতাকর্মীরা অংশগ্রহণ করেন।
মিছিলের অংশগ্রহণকারীরা ফিলিস্তিনের নিরীহ জনগণের ওপর ইসরায়েলের হামলার নিন্দা জানিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দেন। তারা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে ইসরায়েলের এই গণহত্যার বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান।
বিক্ষোভকারীরা বলেন, “ইসরায়েলের এই বর্বরতা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। বিশ্ববাসীকে এর বিরুদ্ধে একতাবদ্ধ হয়ে দাঁড়াতে হবে। আমরা ফিলিস্তিনের মুসলমান ভাই-বোনদের প্রতি সমর্থন জানাই এবং তাদের পাশে থাকার অঙ্গীকার করছি।”
বিক্ষোভ শেষে আয়োজকরা এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে ইসরায়েলের এ ধরনের মানবতাবিরোধী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান।
লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান: প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি
লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান বাংলাদেশের অন্যতম সুন্দর ও প্রাকৃতিকভাবে সমৃদ্ধ বনাঞ্চল। এটি মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত এবং ১৯৯৬ সালে জাতীয় উদ্যান হিসেবে ঘোষণা করা হয়। প্রায় ১,২৫০ হেক্টর জায়গাজুড়ে বিস্তৃত এই উদ্যানটি বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও জীববৈচিত্র্যের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান।
উদ্যানের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য:
লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের চারপাশে রয়েছে সবুজে ঘেরা পাহাড়ি বন। বড় বড় গাছপালা, বাঁশঝাড়, লতা-গুল্ম এবং ঝরনাধারা মিলে উদ্যানটি এক অপার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য সৃষ্টি করেছে। ঘন সবুজ বনের ভিতর দিয়ে পায়ে হাঁটার সরু রাস্তা পর্যটকদের মনোরম অভিজ্ঞতা প্রদান করে। সকালে কুয়াশার চাদরে ঢাকা এই বন মনে হয় এক স্বপ্নময় রাজ্য।
জীববৈচিত্র্য:
লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানটি বন্যপ্রাণীর জন্য বিখ্যাত। এখানে রয়েছে ২৬ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী, ২৪৬ প্রজাতির পাখি, ৬ প্রজাতির উভচর এবং ২০ প্রজাতির সরীসৃপ। উল্লুক, চশমাপরা হনুমান, মাকাক বানর, কাঠবিড়ালীসহ বিভিন্ন স্তন্যপায়ী প্রাণী দেখা যায়। এছাড়া হরিয়াল, ময়না, কাঠঠোকরা, শ্যামা, বুলবুলি সহ বিভিন্ন রকমের পাখির কাকলি বনটিকে আরও জীবন্ত করে তোলে।
পর্যটন ও ভ্রমণ:
লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান পর্যটকদের জন্য অত্যন্ত আকর্ষণীয় স্থান। এখানে ভ্রমণপিপাসুরা গাইডের সাহায্যে বনের বিভিন্ন ট্রেইল ঘুরে দেখতে পারেন। স্থানীয় আদিবাসীদের সংস্কৃতি ও জীবনধারার সাথে পরিচিত হওয়ার সুযোগও রয়েছে। ট্রেনলাইন দিয়ে ছুটে চলা ট্রেন, সবুজ বনের মধ্যে দিয়ে হাঁটা, পাখিদের গান—এসব মিলে এক রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা হয়।
সমস্যা ও চ্যালেঞ্জ:
লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের জীববৈচিত্র্য বর্তমানে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। বনের ভিতর দিয়ে ট্রেনলাইন চলে যাওয়া, পর্যটকদের অসচেতনতা, অবৈধ বন উজাড় ইত্যাদি কারণে উদ্যানের প্রাণী ও পরিবেশের উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। এসব সমস্যা মোকাবেলায় প্রশাসনের কার্যকর পদক্ষেপ এবং পর্যটকদের সচেতনতা বৃদ্ধি জরুরি।
উপসংহার:
লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান শুধুমাত্র একটি পর্যটন কেন্দ্র নয়, এটি বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং জীববৈচিত্র্যের একটি অনন্য নিদর্শন। এই উদ্যানের সুরক্ষা ও সংরক্ষণে সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন। প্রকৃতির অপার মহিমা অনুভব করতে হলে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান একবার হলেও ভ্রমণ করা উচিত।